লোটাস আহমেদ শুভ, যশোর প্রতিনিধি -
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের স্টাফ কোয়ার্টারের ৬টি ঘর। রাত পৌনে ৮টা থেকে পৌনে ৯টা পর্যন্ত আগুন জ্বলে ওই কোয়ার্টারে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। কিন্তু ততক্ষনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় এক সারিতে থাকা আধাপাঁকা ছয়টি ঘর।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান জানান, কেন্দ্রীয় কারাগারের মধ্যে অনেক গুলো কোয়ার্টার রয়েছে। ওই কোয়ার্টারে মূলত কারারক্ষীরা বসবাস করে থাকেন। আগুনে ৬টি ঘর ছাই হয়ে গেছে। আগুন লাগার পরপরই তিনি ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। কিছু সময়ের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। এরপর আরো দুইটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। ধারণা করছি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। তবে তদন্ত না করে প্রকৃত ঘটনা বলা যাবে না।
কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছেন, কারাগারের মধ্যে পশ্চিমদিকে একলাইনে ৬টি ঘর ছিলো। ওই ঘরে কারারক্ষী আশরাফুল আলম, ইউনুচ আলী, আমিনুর রহমান, সুমন হোসেন, ফারুকুজ্জামান রাসেল এবং জিয়াউর রহমান থাকতেন তাদের পরিবার নিয়ে। আগুন লাগার সাথে সাথে যে যার মতো ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। ঘর থেকে কেউ কিছু বের করতে পারেনি। সবকিছু আগুন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, সুবেদার ইউনুচ আলীর ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত। ওই ঘরে হিটার ব্যবহার করে রান্নার কাজ হচ্ছিল। কোন এক সময় হিটার থেকে আগুন লাগে। এরপর একেএকে ছয়টি ঘরে ধরে যায়। ইউনুচ আলী মাস দুইয়েক হলো অবসরে গিয়েছেন। স্টাফ কোয়ার্টার ছাড়তে তার আরো কয়েকমাস লাগবে বলে তিনি সেখানে থাকেন।
তবে ইউনুচ আলীর ছেলে সাগর জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি ঘরের বাইরে ছিলেন। তিনি শুনেছেন গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়েছে। তবে কার ঘরে আগুনের সূত্রপাত তা তিনি বলতে পারেন নি।
মনিরা খাতুন নাম এক গৃহবধূ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছেন, শিশু সন্তানকে নিয়ে কোন রকম প্রাণে বেঁচে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়েছেন। কোন কিছু নেয়ার সুযোগ হয়নি। তার মতো আরো ৫টি পারিবারের লোকজন নিঃস্ব হয়ে গেলো।
এদিকে আগুনের সংবাদ পেয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান সেখানে যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। এছাড়া যশোর সদর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান নুর জাহান ইসলাম নীরা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন কারাগারে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর পরিদর্শন করেন।
এদিকে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রাব্বানী ও কোতয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান কারাগারের ভেতরে যান। তারা আগুন নেভানোর কাজ তদারকি করেন।
ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার শহিদুল ইসলাম জানান, ছয়টি ঘরে আগুন লাগলে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখনো জানা যায়নি।