সারাদেশ আজ উত্তাল ,
দূর থেকে ভেসে আসে দেখ
বিদেশি পায়ের শব্দ ।
হাঁটছে, হেঁটেই চলেছে ।
পথের ধারে পড়ে থাকা
সেই সুন্দর বাগানটাও
আজ পিষ্ট হয় সেই
বিদেশির পদতলে ।
যত সব ঘ্রাণ,
সব ছড়িয়ে যায়
আকাশে, বাতাসে ।
দিনের বেলায় যে পুষ্পবন
বুটের তলায় পিষ্ট হয়,
রাতে সেগুলো উর্ধ্বাকাশে
প্রতীয়মাণ হয় নক্ষত্রের আলোয়
কারো বাধা মানে না ।
বদ্ধ কারাগার আজ ভর্তি
করে তারা ।
ভর্তি করে পদদলিত পদ্মবনের পদ্ম ।
চারিদিকে অন্ধকার,
আঁধার ঘেরা বদ্ধ ঘরে
আলোর রেখা দেখা যায় ।
খুবই সামান্য একটা
আলোকবিন্দু হঠাৎ পতিত হয়
সেই বদ্ধ কারাগারে ।
নিঃস্ব হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়
সেই পদচারণার দিকে,
কখন ওপর থেকে আসবে
ওই বুটের চাপ ।
তৈরি করতে হয় প্রতিরোধ ।
এতো একটি ফুল,
নয় কোনো পাথর,
যে নিজে ব্যথা না পেয়ে
অন্যকে ব্যথা দিবে ।
অকাতরে জীবন যায়
নকশা আঁকা বুটের তলায় ।
নিজের শরীরে সৃষ্টি করতে
পারে না কণ্টক ।
যদি অন্য
ফুল কাছে এসে ব্যথা পায় ।
তবে কে দেখবে তাকে ?
সেই ভয় ঘিরে থাকে
সারা দেহে, সারা মনে,
সারা প্রাণে ।
মন প্রাণ সব তার ঘেরা ভালবাসায় ।
কিন্তু কেউ তা বোঝে না,
ফুলের কষ্ট শুধু বোঝে
অন্য একটি ফুল ।
অচেনা পথের পথিক
কিছুই বোঝে না ।
ভাল লাগল, তো ছিঁড়ে নিল,
আর না হলে, নিজের অজান্তে
পায়ের তলায় পিষে মারল
ওই নিষ্পাপ পুষ্পদলকে ।
আকাশের চাঁদ যখন
ওই ফুলের দিকে আগে
তাকাত, তখন ভাল লাগত
চাঁদের হাসি ।
আর এখন চাঁদ ফুলের দিকে তাকালেই
মনে জাগে অচেনা ভয় ।
ফুলগুলো কেমন যেন
একা একাই শুকিয়ে যায় ।
ঝরে যায় ।
অন্যের হাতে সম্মান দেওয়ার
চেয়ে নিজে ঝরে যাওয়া ভাল ।
কোনো ছোট ফুল যখন
সদ্য জন্ম নেয় ।
তখন বড় ফুল তার গাছের পাতা দিয়ে
ছোট ফুল কে ঢেকে রাখে ।
নিজের শিশুটিও যদি
ওই বুটের তলায় পড়ে
পিষে যায়, এই ভয়ে ।
ছোট থেকেই পুষ্পদল শেখে,
কিভাবে সম্মান বাঁচাতে হয় ।
আর সম্মান হারানোর আগে
কিভাবে নিজের ইচ্ছায়
জীবনকে মাটির সাথে
মিশিয়ে দিতে হয় ।
আতঙ্ক সবসময় পিছু করে,
কোনো উপায় নেয় বাঁচার ।
চলতে পারে, কিন্তু কতদূর ?
যতদূর বাতাস প্রবাহিত হয় ।
তাই ওরা চলে না, যায় না,
নিজের মতো থাকে ।
আর কেউ তুলে নিলেই
ঝরে যায় ।
চিনতে পারে না, কে ভাল আর কে মন্দ,
শুধু ভাবে, আমি আতঙ্কিত ।
সংগ্রহে, লোটাস আহমেদ শুভ,
যশোর প্রতিনিধি -